তুমি দেখিও না দাপট ক্ষমতার দম্ভ রক্তচক্ষু এই অধমেরে
তুড়ির ইশারায় কতো খড়কুটো ওড়ে গেছে লাবনির চরে।

শোকাচ্ছন্ন সময়ে কি করে করো হে ঠাকুর মন্ত্রোচ্চারণ
শব্দ-মন্ত্রের নীলযাতনা সয়েছি খুব তবু করিনি বারণ!

নটরাজ কি করে বোঝো মঞ্চসাজ
রাষ্ট্রসংঘে মানুষ খেলায় যুদ্ধবাজ।

সর্ব রঙের বিষ সয়ে মন হয়েছে সাদা
ঘুনপোকায় বাঁশি খেলো উতলা রাধা।

মনে রেখো কমরেড সব শব্দের আওয়াজ নাই
সম্মিলিত নিরবতার গুমোটে ভিসুভিয়াস জন্মায়।

দু’চোখ যেদিকে যায় দেখি অবুঝ সবুজদীপ্তি 
সেখানে পতঙ্গ খোঁজে আশ্রয় মানুষ প্রশান্তি।

ক্ষেপা তোর রুদ্রপথে বিছুটি কাঁটার মালা
সাবধানে পা ফেলিস নইলে পাবি বিষজ্বালা!

রূপের জৌলুষে কাছে ডাকে মুগ্ধ পপিফুল
বিরহী মধুকরী মধুকূপ ভেবে হয় আকুল!

অতো কাছে এসো না সখা পুড়ে অঙ্গার হবে
অতো দূরে যেয়ো না সখি ঠান্ডায় জমে যাবে।

১০

তর্জন গর্জনে হয়নি কিছুই অর্জন
সাধনসঙ্গিনী কোথা পাবো নিরঞ্জন?

১১

গৃহবন্দী নরনারী করে কথা-কাটাকাটি
মনের দুঃখে গান করে খাঁচাবন্দী পাখি।

১২

ষোড়শী সৈকত রানি ডাকছে ঝাউবন বিহারে
অবিরল নীলঢেউ সুর তুলে নাচে বঙ্গ-সাগরে।  

১৩

হিমশীতল কাতর চোখে নির্বাক-ধূসর যাত্রা
বুকে বাজে মিষ্টিমুখ পুষ্পিত ঠোঁট সুমাত্রা।

১৪

ঈশ্বরীর স্বপ্নরাজ্যের সূচি সূচিকরেরা লুটেরা স্বেচ্ছাচারী মিথ্যাবাদী
ঈশ্বরীর যাদুমন্ত্রে সুমতি হোক তাদের ,মানুষ না হোক নৈরাজ্যবাদী।

১৫

প্রেমের টানে উৎফুল্ল জনতা বার্লিন প্রাচীর ভাঙলো
একি সময়ে পল্টনের লালবাড়িতে প্রাচীর উঠলো।

১৬

মাংসকেশি আম্ররসে আসক্ত মির্জা গালিব
আলিকার দ্রবণরসে মাতোয়ারা মানিক।

১৭

মধুমাসের মধুজলে ভিজুক মনের অতল
পবন হাওয়ায় খুলুক মন মানুষের আগল।

১৮


চর্মচোখে নয় রুহানি চোখে দেখো একবার
বুকের কলবে আমায় খোঁজে পাবে বারবার।

১৯

ঠুস করে খসে পড়ে জীবনের সুখ
পলেপলে জমা হয় জীবনের দুঃখ।

২০

ক্রমাগত আলোকিত অন্ধকারের দিকে ধাবমান জীবন
কৃষ্ণগহ্বরটি আলোকায়নে অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ।

২১

আষাঢ় – শ্রাবণে ভিজে বাবা-মা’র কবর
জ্বলে কলব, বিরহে কাঁদে বুকের পাঁজর।

২২

মনসার পাহারায় চুমু খায় অপসরী
কি করে কবিতা লিখি বলো সরস্বতী।

২৩

মধু পূর্ণিমার রাতে মন চায় ভেজাতে তাড়িখলার রসে
আলো – আঁধারে টঙের পেছনে কালীরূপে সে আসে ।

২৪

আমার দুঃখ দিনে তোমরা অট্টহাসি দিবে জানি
তোমাদের বিপদ আপদে তবুও ছুটে যাই আমি।

২৫

সামনে পড়লে সবাই বলে  আমার যানের মনের ভাই
অসুখ বিসুখে ডাকালে,তারাই করে পালায় পালায়।

২৬

নতুন পথ দেখায় যে সেই তো পথপ্রদর্শক
চির কৌতুহলী মানুষ অজানা পথের পর্যটক।

২৭

ধুপধোঁয়া দেখো সবাই
চুপধোঁয়া দেখোনা হায়! 

২৮

আমি তো মূর্তমান দুঃখের দেবরাজ
বেদনার নামতা পড়ি সকাল-সাঁঝ।

২৯

ফাঁদপাতে বীভৎস উল্লাসে পশু হত্যাকারী
আশরাফুল মাখলুকাত নামটি বেশ ভারী।

৩০

রোদেলার হাসি মিলিয়ে যায় সাঁঝের গগনে
ঘানির টানে ঘুরছে জীবন আঁধারের লগ্নে।

৩১

সুদূরতমা তোমার সুকেশী ষোড়শী নাতনী
কবির জলসায় আজ সে কবিতার সজনী।

৩২

জামাত রাজাকার যদি হয় বঙ্গপাল
শস্যক্ষেত উজাড়ে  লাগেনা পঙ্গপাল।

৩৩

গাঙ মনে রাখে কল্লোলিত স্রোতের ভয়ঙ্কর নিঃশ্বাস
তীরবাসি শিকড়হীন তবু গাঙের জলে রাখে বিশ্বাস।

৩৪

শ্রীমতীর অশ্রুকণারা  আজ সৈকতের কাচবালি
শামুকের বুকে দুঃখ বুনে নীলঘর নিরিবিলি।

৩৫

বাঁকখালীর বাঁকে উড়ে স্মৃতির পাখি
মেঘের আদলে আমি নিঃসঙ্গতা আঁকি।

৩৬

রক্তচোষা মশা-মাছি উড়াল দিচ্ছে বিমানে
চোখকানা রাষ্ট্রযন্ত্র কাটায় কীসের ধ্যানে।

৩৭

আলো ঝলোমল স্বপ্ন সমূহ সামলে রেখেছি সিন্দুকে
তবুও কতো কুৎসা রটায় নিমকহারাম নিন্দুকে।

৩৮

মনোভূমে দিনে দিনে বেড়ে ওঠে নীল বেদনা-বৃক্ষ
সুখপাখির লাগি বেঁধেছি ঘর তবু কেন এত দুঃখ!

৩৯

দেহনৌকা বোঝাই করলাম মনবিরহের মেঘে,
অকালের স্বর্ণলতায় মোহের অর্কিড আছে জেগে।

৪০

ধ্যান জ্ঞান ধুম্রজলে দ্রবীভূত পৃষ্ঠাগুলো সবুজ দুর্বাঘাস
মাধুকরী তোমার পরিযায়ী স্বাদে আমার হলো সর্বনাশ!

৪১

অনায়সে কি করে বোঝো মানুষের চোখ
আমি তো বুঝিনা তোমার মনের অসুখ।

৪২

উপদ্রুত রাজনীতির কালে দেশমাতৃকার টানে
জীবন সঁপেছিলাম সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার গানে।

৪৩

দেখেছিলাম তারে নবমীর সান্ধ্য আরতিতে
বিসর্জনে তাকে পাই না সাঁঝের মায়াতে ।

৪৪

দুইকান কাটা যখন ক্ষমতাবান
তাদের আবার লাজ-সম্মান!

৪৫

বালুচিকায় ডুব দিয়ে দেখি মরীচিকার আয়না
কথার ফুলঝুরিতে বিশ্ববাটপার শিয়ালসেয়ানা।

৪৬

আঁখিজলে জ্বলে বিমূর্ত নূরের মাজার
নমরুদের আগুনে দেশ হলো উজাড়।


৪৭

সখি প্রবারণা পূর্ণিমায় পবিত্র আগুনে উড়িয়েছ রঙিন ফানুস
তোমার গুপ্ত আগুনে যতই পুড়াও মানিক হবে খাঁটি মানুষ।

৪৮

মহাজাগতিক সংঘর্ষে ছুটে এলো উল্কা আরবের মরুতে
খোদার প্রেমে দিওয়ানা মানুষ হজরে আসওয়াত চুমুতে।


৪৯

সামনে পড়লে চামচামি, আড়ালে বদনামি
গড়পড়তা মানুষের মনে হিংসার সুনামি।

৫০

কালের ব্যথা ধরেছি শরীরে ব্যথা জিয়ে থাক আমরণ
সখি আসো যদি ব্যথার চিতায় তবেই হবে সহমরণ!


৫১

হৃদয় পুড়ে পুড়ে হলো কালো কষ্টিপাথর
কথার খেলাপি তুমি করছ অন্যের ঘর।

৫২

নয় হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, এসেছে এক মিথ্যেবাদী রাখাল
বাঘ এলো বাঘ এলো বলে আমাদের দেখালো কালো শেয়াল।

৫৩

আত্মসুখ ত্যাগে যাদের তরে বিপন্ন করেছি জীবন
অন্তিম সায়াহ্নে বুঝিলাম এ আমার সুখের মরণ!

৫৪

আজ স্বাধীসতা অপাংতেয় মুক্তির পাখিরা বড় উদাস
মনের মুক্তি ঘটেনি তোমরা আজও ঔপনিবেশিক দাস।